English
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশঃ ২০২০-০৮-২৯ ০১:১২:৫১
আপডেটঃ ২০২৪-০৩-২৫ ০০:৪৮:৫৪


প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধিতে কার্যকর কিছু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস

প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধিতে কার্যকর কিছু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস

মইনুল ইসলাম মিঠু


প্রতিদিনের কাজগুলো করতে করতে অনেক সময়ই দেখা যায় আমরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। আবার দেখা যায় অনেক কাজই আমরা ভুলে যাই আবার কোনো কোনো কাজ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লেগে যায়সময়ের সাথে প্রতিনিয়ত আমাদের এই প্রতিযোগিতায় কখনো আমরা পেরে উঠি আবার কখনো পারি নাএতে সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ে আমাদের প্রোডাক্টিভিটির উপর। এর ফলে আমাদের প্রোডাক্টিভিটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই সমস্যার সম্মুখীন শুধু আপনি অথবা আমি নই সারা বিশ্বের সকল মানুষই কমবেশি এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কিন্তু আমরা সবাই চাই আমাদের কর্মক্ষেত্রে বা বাড়িতে আমরা যেন আমাদের কাজগুলো সুন্দর ভাবে শেষ করতে পারি অর্থাৎ আমাদের কাজগুলো ইফেক্টিভলি শেষ করতে পারি এর ফলে যেটা হয় আমাদের প্রডাক্টিভিটি বহুগুণে বেড়ে যায়। আমাদের যে কোনো কাজে আমাদের এই প্রোডাক্টিভিটি বা আমাদের কাজগুলো ইফেক্টিভলি শেষ করতে পারার জন্য আমাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোতে বেশ কিছু অ্যাপস আমরা ব্যবহার করতে পারি যে অ্যাপসগুলো আমাদের প্রডাক্টিভিটি বাড়াতে বহুগুণে সাহায্য করে।আজকের লেখাটি সেরকম কিছু অ্যাপস নিয়েই

 

এক. Evernote:  প্রথমেই বলবো এভারনোট অ্যাপটির কথা, এতো চমৎকার একটি অ্যাপ যারা ব্যবহার করেছেন বা করছেন তারাই শুধু এই অ্যাপটির কার্যকারিতা অনুধাবন করতে পারবেন। এই অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরের নোট টেকিং অ্যাপস গুলোর মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় কারণ একটি অ্যাপের ভেতর অনেকগুলো ফিচার যেমন টেক্সট, ইমেজ, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। শুধু তাই নয় এর বেশকিছু বিল্ট-ইন টেমপ্লেটও আছে যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই বিভিন্ন ফরমেটের নোট নেয়া যায়। অ্যাপসটির সবচেয়ে বড় যে সুবিধা সেটা হচ্ছে এটা মাল্টিপল ডিভাইসে ব্যবহার করা যায় এবং অটোমেটিক্যালি সিঙ্ক হয়ে যায় যার ফলে কোনো একটা ইম্পর্টেন্ট বিষয় আপনি খুব সহজেই মোবাইলে লিখে রাখলেন আবার সেটা আপনার পিসিতে ব্যবহার করতে পারছেন। এর তিনটি ভার্সন রয়েছে বেসিক, প্রিমিয়াম এবং বিজনেস ভার্সন। ফ্রি ভার্সনটিতে একসাথে দুইটি ডিভাইসে কাজ করা যায় এবং প্রিমিয়াম এবং বিজনেস ভার্সনে আনলিমিটেড ডিভাইসে ব্যবহার করা যায়

 

দুই. Google Drive: দুই নাম্বারে থাকবে গুগল ড্রাইভের অ্যাপ টি। এটি গুগলের নিজস্ব অ্যাপ। সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস আসার আগে থেকেই অনেকে গুগল ড্রাইভ ব্যবহারে অভ্যস্ত থাকার কথা। এই অ্যাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটা ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং নির্ভরযোগ্য। কোনো একটি ডকুমেন্ট একসাথে অনেকে কাজ করার জন্য এর জুড়ি নেই। আবার আপনার যদি হার্ডড্রাইভের জায়গা কম থাকে সে ক্ষেত্রে গুগল ড্রাইভ আপনাকে ফ্রিতে 15 জিবি স্টোরেজ ফ্রি দিচ্ছে। এছাড়াও এই অ্যাপটি সবচেয়ে কম খরচে অনেক বেশি স্টোরেজ দিয়ে থাকে এবং এর মাধ্যমে একই সাথে ডকুমেন্ট, স্প্রেডশিট, পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড ইত্যাদি সকল ফরম্যাটেই কাজ করা যায়

 

তিন. CamScanner: তিন নাম্বারে যে অ্যাপটি কথা বলব সেটা হচ্ছে ক্যামস্ক্যানার। যে কোনো ধরনের ডকুমেন্ট স্ক্যান করা এবং শেয়ার করার জন্য সবচাইতে উপযোগী একটি অ্যাপ। এই অ্যাপটির মাধ্যমে চাইলে আইডি কার্ড থেকে শুরু করে ছবি যে কোনো ডকুমেন্ট ইত্যাদি স্ক্যান করা যায় খুব সহজেই আবার কোনো ইমেজ থেকে শুধুমাত্র লেখাগুলিও স্ক্যান করা যায়। অ্যাপটির মাধ্যমে স্ক্যান করা ডকুমেন্টগুলো ক্লাউডে স্টোর করে রাখা যায়। এর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে মাল্টিপল ডিভাইসে অ্যাপটি ব্যবহার করা যায়। সবচাইতে বড় সুবিধা যেটা তা হচ্ছে পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে কনফিডেনসিয়াল ডকুমেন্টগুলো সিকিউর করা যায়। খুব সহজেই স্ক্যান করা ডকুমেন্ট লিঙ্কডইন হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জার ইমেইলের মাধ্যমে শেয়ার করা যায়

 

চার. Todoist: এরপর কথা বলবো সেটি হচ্ছে টুডুইস্ট নামের অ্যাপটি। নামেই বোঝা যাচ্ছে অ্যাপটি দিয়ে সাধারণত কী কী  কাজ করা যায়। আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলো এই অ্যাপটিতে নোট নিয়ে রাখতে পারি যাতে কোনো কাজ বাদ না থেকে যায় আবার অ্যাপসটির মাধ্যমে আমরা আমাদের কাজগুলোর প্রায়োরিটি সেট করতে পারি। এর বিল্ট-ইন ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে আমরা আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ, মিটিং ইত্যাদির তালিকা করতে পারি। এই অ্যাপটি একসাথে মাল্টিপল ডিভাইসে কাজ করে এবং অ্যাপটি থেকে আমরা আমাদের কাজগুলো অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারি।

 

পাঁচ. Slack: স্ল্যাক অ্যাপটিকে বলা হয়ে থাকে বর্তমানে সবচেয়ে ভালো বিসনেস চ্যাটিং অ্যাপ। এটা টেক্সট এবং ভয়েস দুইটি মাধ্যমেই ব্যবহার করা যায়। এই অ্যাপটির সাথে খুব সহজেই গুগল ড্রাইভের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায় ফলে ডকুমেন্ট শেয়ার করা যায় খুবই সহজে। এই অ্যাপটিতে এক বা তার অধিক চ্যানেল তৈরি করা যায়, যার ফলে একজন ব্যাক্তি একই সাথে বিভিন্ন টিমের সাথে কথা বলতে এবং বার্তা আদান প্রদান করতে পারেন। সাধারণত ছোটখাটো টিমের জন্য এর ফ্রি ভার্সনটিই যথেষ্ট

 

ছয়. LastPass: এই অ্যাপটিকে শুধুমাত্র প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপ বললে ভুল হবে কারণ সবচেয়ে ভালো সিকিউরিটি অ্যাপগুলোর মধ্যেও এটি অন্যতম। বর্তমানে আমাদের কমবেশি প্রতিদিনই বিভিন্ন সাইটে রেজিস্টার করতে হয় এবং সব সাইটেই রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয় এর ফলে এতো এতো পাসওয়ার্ড মনে রাখা মোটামুটি সবার জন্যই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে আর এই সমস্যা সমাধানের জন্যই মূলত এই অ্যাপটি তৈরি হয়েছে। এই অ্যাপটিতে আমরা আমাদের রেজিস্টার করা সাইটগুলোর পাসওয়ার্ড খুব সহজেই স্টোর করে রাখতে পারি এবং সাইটগুলোতে লগইন করতে পারি যার ফলে এত এত সাইটের পাসওয়ার্ড মুখস্ত রাখার মতো কষ্টকর কাজটি করতে হয় না



ক্যাটেগরিঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,


মইনুল ইসলাম মিঠু

আইটি ডিপার্টমেন্ট, ইউসিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড



আরো পড়ুন