English
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশঃ ২০২২-০৬-১১ ০৬:৩৬:৪৪
আপডেটঃ ২০২৪-০৩-২৯ ০৮:৫১:২০


দিনাজপুরের লিচু

দিনাজপুরের লিচু


মফস্বলের ডায়েরি

বিজয় মজুমদার

বাংলাদেশে একটা ফল একটা জেলাকে বিখ্যাত  করে তোলে তেমনি অত্যন্ত রসালো সুস্বাদু ফল লিচু বাংলাদেশের একটি জেলাকে বিখ্যাত করে তুলেছে বাংলাদেশে যেমন আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত জেলার নাম হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জতেমনি লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত জেলা হচ্ছে দিনাজপুর  আবার দিনাজপুরের মধ্যে মাসিমপুর নামের এলাকা লিচুর জন্য বিখ্যাত

 লিচুর সিজনে দিনাজপুরে চোখে পড়বে সড়কে ভ্যান কিংবা  ইজি  বাইকে করে বিক্রেতার লিচু নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এদের বেশির ভাগের গন্তব্য লিচু হাঁটি  দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় লিচু হাঁটি বা আড়ত  হচ্ছে বড় মাঠের লিচু হাঁটি  করোনাকালীন সময়ে দিনাজপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক এটি চালু করেন যা এখন দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় লিচুর বাজারে পরিণত হয়েছে দিনাজপুর শিশু পার্কের কাছে এই লিচু হাঁটিতে গেলে দেখতে পাবেন নানান প্রজাতির লিচু

লিচু ছোট বড় সবার খুব প্রিয় ফল আর অনেকেই এটা গোগ্রাসে গিলতে থাকেন তবে অন্য ফলের মত লিচু একবারে অনেক পরিমাণে খাওয়া বিপজ্জনক বিশেষ করে খালি পেটে কিংবা যাদের অপুষ্টি রয়েছে তাদের জন্য লিচুবিশেষ করে কাঁচা লিচুর হাইপোগ্লাইসিন নামের উপাদান শিশুর শরীরে শর্করা তৈরিতে বাঁধা দেয় যা শিশুর জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে   তাই ভরা পেটে এবং অল্প অল্প করে লিচু খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী


লিচু কেনার ঝক্কি

লিচু অনেকের অনেক পছন্দের ফল তবে লিচু যেভাবে বিক্রি হয় সেটা বুঝতে পারলে বেশির ভাগ ক্রেতা লিচু কেনার এই ধরণটিকে পছন্দ করবেন না বলে আমার বিশ্বাস বাজারে  ৫০ টি লিচু একটি থোকা হিসেবে বিক্রি হয় আর সাধারণ ক্রেতা সরল বিশ্বাসে এটি কিনে নিয়ে বাসায় যায় তবে যদি কোনো ক্রেতা সে থোকা খুলে গুণতে শুরু করেতাহলে তার একটা বড়সড় ধাক্কা খাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৫০ টি লিচুর থোকায় ৫০টি লিচু থাকে না

এখন থেকে  প্রায় ২০ বছর আগে আমার এক বড় ভাই কাজের সূত্রে দিনাজপুরে বেড়াতে এসেছিলেন সময়টা ছিল রসালো ফল লিচুর তাই আত্মীয়দের অনুরোধে এবং নিজের পরিবারে জন্য তিনি প্রায় হাজার সাতেক লিচু কিনে খুশি মনে রওনা দিলেন ঢাকার পানে

কিন্তু তার এই হাসি উবে গেল তখনযখন প্রায় সকলের কাছ থেকে তিনি একই অভিযোগ পেলেন লিচু গুণে প্রায় সবাই তাকে জানালো যে প্রতি ৫০টি লিচুর থোকায় কেউ ৫০টি লিচু পায়নি আর আমার সেই বড় ভাই তারপর নিজের লিচু গুণে অনেক লজ্জিত  হয়েছিলেন       

লিচুর থোকায় অনেক বিক্রেতা কম পরিমাণ লিচু রাখেকারণ বিক্রেতার হয়ত লিচু গোণার সময় নেই আমি বাজারে গেলে চেষ্টা করি লিচু গুণে নিতে খুব কম সময় আমি ৫০টি লিচুর থোকায় ৫০টি লিচুর অস্তিত্ব পেয়েছি এমন কি একবার আমি ৫০টি লিচুর থোকায় গুণে  ৩৮টি লিচু পেয়েছি

 

তাহলে উপায়

সাধারণত বাগান থেকে নিলে লিচু কম হওয়ার  সম্ভাবনা কমে যায় সেখানে সাধারণত একটা বা দুটি লিচু বেশি বাঁধা হয় (যেহেতু থোকা থেকে লিচু ঝরে পরে যায়আর বাজার থেকে লিচু কেনার সময় অবশ্যই লিচু গুণে নিতে হবে তাহলে অন্তত কম লিচু পাবার ঘটনা কমে যাবে তবে সবার পক্ষে (বলতে গেলে বেশির ভাগ লোকের পক্ষেবাগানে গিয়ে লিচু কেনা সম্ভব না    

আরেকটি উপায় অবশ্যই আছে সেটি অবশ্য এখনো বাংলাদেশে চালু হয়নিআর সেটা হচ্ছে কেজি দরে লিচু কেনা  ভোক্তাদের ঠকানো বন্ধে অদূর ভবিষ্যতে হয়ত এটাই হবে লিচুর বিক্রির উত্তম ব্যবস্থা                    

 


ক্যাটেগরিঃ জীবনধারা,


বিজয় মজুমদার

লেখক, বিজ্ঞাপনকর্মী ও সমাজকর্মী