English
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

প্রকাশঃ ২০২১-১১-৩০ ১১:৫৬:০৩
আপডেটঃ ২০২৫-০৬-২৫ ১৯:১৪:৫৩


আগস্ট ১৭

আগস্ট ১৭


রাশেদ জামান

 

 

তুরস্ক, ১৭ আগস্ট ১৯৯৯

সেদিন রাত ৩টায় জীবনে প্রথম ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম রাতে এক বন্ধুর তিনতলার ফ্ল্যাটে ছিলাম একটু দেরি হলেও আমরা সবাই ছুটে এপার্টমেন্টের সামনেখোলা জায়গায়দাঁড়াতে পেরেছিলাম

সেই সপ্তাহে পর পর কয়েকদিন কয়েকবার ভূমিকম্প হলো

দ্বিতীয় ভূমিকম্পের সময় আমি আমার ফ্ল্যাটে এগারো তলায় ছিলাম নীচে নামার চেষ্টা করার প্রশ্নই আসে না, ছাদে যাবার পথও খুঁজে পাই নাই ভয়ের তীব্রতায় টানা ৪৮ সেকেন্ডকে মনে হয়েছিল জীবনের দীর্ঘতম সময়

আমি তখন সবে মাত্র স্হাপত্যের পড়াশুনা শেষ করে একটা ফার্মে কাজ শুরু করেছি এবং Urban Planning - পার্ট টাইম মাস্টার্স করি ভূমিকম্পের পুরো ৪৮ সেকেন্ড ধরে ভাবছিলাম একটা এগারো তলা বিল্ডিং কী করে এভাবে কাঁপতে পারে তার সাথে সাথে দোয়া দুরুদ পড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম পৃথিবীর মায়া ছাড়ার জন্য


. থেকে . এর মতো ছিল ভূমিকম্পর তীব্রতা যতদূর মনে পড়ে সর্বমোট প্রায় ৪৮ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল অথবা ভয়াবহ ভাবে পঙ্গু হয়েছিল (যা ছিল বেঁচে না থাকার সামিল)

তুরস্ক একটি NATO ভুক্ত উন্নত দেশ হাজার বছরের ঐতিহাসিক প্রমাণ আছে যে তারা স্হাপত্যে বিশেষ পারদর্শী তাদের প্রত্যেকটা ইউনিফর্ম পরা বাহিনী নিজের কাজে তুখোড় ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত

আমি সেই টার্কিকে ভূমিকম্পে ভয়াবহ নাজুক পরিস্হিতিতে পড়তে দেখেছি কয়েকদিনের জন্য সবকিছু ছিল নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ বাইরে

 

এবার আসি আমাদের বর্তমানের বাংলাদেশের কথায় এক রানা প্লাজা ভেঙ্গে যাবার পর আমাদের disaster management-এর আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছিল  হাস্যকরভাবে কার কী দায়িত্ব কেউই অবগত নন ঝাঁপিয়ে পড়া সাধারণ জনগণ ছিলো বলে যাত্রায় কোনমতে রক্ষা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যদিও অবর্ণনীয় এবং দোষীরা এখনো বিচারের উর্ধ্বে রয়ে গেল

বেশ অনেক বছর ধরে বিল্ডিং কোডের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র ভারী কংক্রিট ঢেলে যে অপরিকল্পিত নগর সভ্যতা তৈরি করছি আমরা - তার কোনোকিছুই শক্ত ভূমিকম্পে টিকবে না

চাক্ষুস অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত হয়ে বলছি এখনো সময় আছে কঠোর হবার - সাবধান হবার

সম্প্রতি যা হলো - তা শুধুইইশারা!

 


ক্যাটেগরিঃ জীবনধারা,


রাশেদ জামান

সিনেমাটোগ্রাফার। আর্কিটেক্ট। আয়নাবাজি মুভির সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী। টানা ছয় বছর কাজ করেছেন হলিউডের ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। স্টিল ফটোগ্রাফার হিসেবে তার তোলাছবি ব্যবহৃত হয়েছে ২০০৬ সালে বিশ্বখ্যাত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি প্রকাশিত ‘এ লিটল পিস’ পিকচার বুকের প্রচ্ছদে। আর্কিটেক্ট হিসেবে কাজ করেছেন ইস্তানবুল, কায়রো এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে। আরো জানতে ভিজিট করুন : www.rashedzaman.com



আরো পড়ুন