মঙ্গলবার ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের আয়োজিত ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার : পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শীর্ষক রোড শোতে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে এগোতে থাকলে এখনই বাংলাদেশে বিনিয়োগের সময় ও উপযুক্ত জায়গা। এখন না করলে ভুল হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না। তখন বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ করা হবে।
এদিন দুবাইয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানের প্রথম অনলাইনে বেনিফিশিয়ারি অনার্স (বিও) হিসাব উদ্বোধন করা হয়।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, গত দুইদিন আমরা দুবাইয়ের বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখেছি।
তিনি বলেন, আমরা অনেকে ভুলেই গিয়েছিলাম দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের কাজ শেয়ারবাজারের এবং ব্যাংকের কাজ স্বল্পমেয়াদী ঋণ দেয়া। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংকগুলো এক বছর মেয়াদী আমানত নিয়ে ৪-৫ বছর মেয়াদী ঋণ দেয়। যাতে করে ঋণ খেলাপি তৈরি হয় এবং ব্যাংকগুলোকে বিপদে পড়তে হয়।
‘এতো আইপিও কেন দেওয়া হয়?’ এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে ক্যাপিটাল দেওয়া না হলে, কে দেবে? সেকেন্ডারি মার্কেট হলো বাহির হওয়ার রাস্তা। তাই আমরা এখন প্রাইমারি মার্কেটকে গুরুত্ব দিচ্ছি। তিনি বলেন, আগামীতে দেশে বড় বড় অর্থায়নের প্রয়োজন হবে। যা শেয়ারবাজার থেকে দিতে হবে। এটা বন্ডের মাধ্যমে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
গত কয়েকমাসে অনেক বন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সব বন্ড বিক্রি হয়েছে। কোনো বন্ড আন্ডারসাবসক্রাইব হয়নি। এই বন্ড ব্যবসায়ীদেরকে এগিয়ে নেবে।
তিনি বলেন, যারা ঝুঁকি নিতে চান না, তারা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে। অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, প্রতিটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১০-১৮ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেবে। এখন কেউ যদি লোকসান করতে না চায়, তাহলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে এবং বন্ডে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তবে সক্ষমতা থাকলে নিজেই পোর্টফোলিও ম্যানেজ করতে বলেছেন তিনি। ফলে লোকসান করে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না।
গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্টে উৎসাহিত করার কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কোনো কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে সে কেন শেয়ারবাজারে আসবে? তাই গ্রিন ফিল্ডের প্রজেক্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অতীত রেকর্ড, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ইতিহাস বিবেচনায় নিতে হবে। সব ব্যবসাতেই ঝুঁকি আছে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারে গেইন করতে গেলে ঝুঁকি নিতে হবে।
তিনি জানান, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শেয়ারবাজারে অনেক রিফর্ম হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বাংলাদেশে শেয়ারবাজারসহ সব ক্ষেত্রেই এখন বিনিয়োগের উৎকৃষ্ট সময়। আমাদের শেয়ারবাজার সময়ের ব্যবধানে অনেক উন্নত হয়েছে। অনলাইনে বিও খোলাসহ নানা অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান কমিশন একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ জানিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আরিফ খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আকার খুবই দুর্বল। বাজারের উন্নয়নের জন্য এই দুই খাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানিগুলো থেকে মন্দাবাজারেও উল্লেখযোগ্য রিটার্ন পাওয়া গেছে। এজন্য ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যের কথায় দুর্বল শেয়ারের পেছনে দৌড়ালে লোকসানের শঙ্কা বাড়ে। এছাড়া লোকসান করে অনেকে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দোষারোপ করে। এটা ঠিক না। তাই বিনিয়োগের কোম্পানির তথ্যাদি বিশ্লেষণ, করপোরেট গভর্নেন্স পরিপালনের বিষয়, অতীত রেকর্ড দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর সেটা সম্ভব না হলে ভালো ফান্ড ম্যানেজারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে বলেছেন তিনি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে শেয়ারবাজারের একইধারায় উন্নয়ন হয়নি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের থেকেও আমাদের শেয়ারবাজার অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এই বাজারকে উন্নয়নে শুধুমাত্র ইক্যুইটির পরিবর্তে নতুন নতুন পণ্য সংযোজন করতে বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, এখন শেয়ারবাজারে লেনদেন বেশি হওয়ার কারণে সৃষ্ট কিছু সমস্যা কাটিয়ে তুলতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) চালু করা হবে। এরইমধ্যে ২০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে এই ওএমএস সিস্টেমের জন্য আবেদন করেছে।
ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রহমত পাশা তার বক্তব্যে প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ দুবাই মলের পাশে একটি ডিজিটাল বুথ চালু করতে যাচ্ছে। ওই বুথে গিয়ে এবং বাসায় বসেও দুবাইবাসীরা লেনদেন করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
১০ ফেব্রুয়ারি সকালে ‘সুকুক: দ্যা নিউ ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সেমিনার হবে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অংশ নেবেন।
১১ ফেব্রুয়ারি সকালে ‘স্কোপ অব প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যান্ড ভেনচার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সেমিনার হবে। অংশ নেবেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
রোড শোর শেষদিন ১২ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠক। এখানে বিনিয়োগকারীদের ছোট ছোট গ্রুপ অংশ নেবে।
ড. বিজন কুমার শীল বিস্তারিত
বিপরীত স্রোত প্রতিবেদন বিস্তারিত
ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী বিস্তারিত
যারিন মালিয়াত অদ্রিতা বিস্তারিত
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বিস্তারিত
মাইক্রোসফট অফিস স্পেশালিস্ট (M.. বিস্তারিত
মুস্তাকিম আহমেদ বিস্তারিত
সাংবাদিক শফিক রেহমানের পুরো বক.. বিস্তারিত
উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আ.. বিস্তারিত