জসীম উদ্দিন রাসেল
বছরের শুরুতেই ইলন
মাস্ক আলোচনায় থেকেছেন কয়েকদিন। ৭ জানুয়ারি তিনি জেফ বেজসকে টপকিয়ে বিশ্বের শীর্ষ
ধনীর স্থান দখল করে নেন। এই দিন তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৮৫ বিলিয়ন ডলার। তবে
কয়েকদিন তিনি এক-দুই নাম্বারে উঠানামা করেছেন। এবং এর পেছনের কারন ছিল টেসলার
শেয়ারের দাম উঠা-নামা। তবে এখন পর্যন্ত তিনি শীর্ষ স্থানই ধরে রেখেছেন।
ইলন মাস্ক এর আগে ২৪
নভেম্বর ২০২০-এ বিল গেটসকে টপকে দ্বিতীয় ধনীর তালিকায় চলে আসেন। এ সময় তার সম্পদের
পরিমাণ দাঁড়ায় ১২৮ বিলিয়ন ডালার। তার এই উত্থানের পেছনেও তার ইলেক্ট্রিক কার
কোম্পানি টেসলার শেয়ার প্রাইস বেড়ে যাওয়ার অবদান ছিল। তৃতীয় স্থানে চলে যাওয়া বিল
গেটস এর সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১২৭.৭ বিলিয়ন ডলার।
বিল গেটস একাধারে টানা
অনেক বছর প্রথম স্থানে ছিলেন। ২০১৭ সালে সেই স্থান দখল করে নেন অ্যামাজনের সিইও
জেফ বেজস। অনেকেই জানেন কয়েক দশক ধরে বিল গেটস তার আয়ের সিংহভাগ মানবকল্যাণে দান
করছেন।
তবে জেফ বেজস বেশি দিন
প্রথম স্থান ধরে রাখতে পারেন নি। তিন বছরের মধ্যেই ইলন মাস্ক শীর্ষে চলে আসেন।
জানা যায়, টেসলার বাজার মূল্য ৭০০ বিলিয়ন ডলার যা একত্রে টয়োটা, ভক্সওয়াগন,
হুন্দাই, জিএম এবং ফোর্ড-এর থেকেও বেশি।
এতো ডলার দিয়ে তিনি কী
করবেন? তার পূর্বসুরীদের দেখা যায় সম্পদের প্রায় পুরোটাই দান করে দিতে। কিন্তু
তিনি বলেছেন, তার সম্পদের অর্ধেক তিনি পৃথিবীর সমস্যার সমাধানে কাজে লাগাবেন। আর
বাকি অর্ধেক মঙ্গল গ্রহে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে
কাজে লাগাবেন। যদি কোনো সময় আবার পৃথিবীতে ডায়নোসর আক্রমণ করে বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ
বেধে যায় বা আমরা নিজেরাই যদি নিজেদের ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হয়ে যাই তাহলে কাজে
আসবে।
ইলন মাস্ক শীর্ষ ধনী
হওয়ার পেছনে কয়েকটি বিষয় সাহায্য করেছে। এর মধ্যে একটি হলো, টেসলা ইলেক্ট্রিক কার তৈরির
কারণে ট্যাক্স সুবিধা পাচ্ছে যা তাকে অন্যান্য কার কোম্পানি থেকে প্রতিযোগিতায়
এগিয়ে রাখছে। আর অন্য দিকে, জেফ বেজস-এর অ্যামাজনের শেয়ার প্রাইস করোনাভাইরাসের
কারণে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কিন্তু তার স্ত্রী ম্যাকেঞ্জির সাথে বিচ্ছেদের কারণে
৪% শেয়ার দিতে হয়েছে। আবার অ্যামাজনের কিছু আইনি ঝামেলাও রয়েছে। এসব বিষয়ও মাস্ককে
শীর্ষ স্থানে আসতে সহযোগিতা করেছে।
২০২০ সালে একদম শেষদিকে
৯ ডিসেম্বর জানা যায়, ইলন মাস্ক সিলিকন ভ্যালি ছেড়ে টেক্সাস শিফট করছেন। এর কারণ
হিসেবে জানা যায়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের সময় টেসলা কার কোম্পানির
ফ্যাক্টরি খুলতে অনুমতি দেয়নি। তবে আরেকটি বড় কারণ রয়েছে এর পেছনে, সেটি হলো
ট্যাক্স সুবিধা। টেক্সাসে ট্যাক্স সুবিধা বেশি।
তবে শুধু ইলন মাস্ক না
জেফ বেজস এবং বিল গেটস যে ওয়াশিংটন ডিসি-তে থাকেন সেখানেও স্টেট ইনকাম ট্যাক্স
দিতে হয় না। তার মানে বিশ্বের প্রথম তিনজন ধনী ব্যক্তি স্টেটকে কোনো আয়কর দিতে হবে
না। আমেরিকাতে ৯টি স্টেট তাদের নাগরিকদের কাছ থেকে কোনো আয়কর নেয় না। তাহলে তারা
তাদের খরচ চালায় কীভাবে?
তাদের আয় মূলত আসে
পর্যটন এবং প্রকৃতিক সম্পদ থেকে। কয়েকদিন আগে সদ্য বিদায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমন স্টেটে
যেতে চাচ্ছেন যেখানে ব্যক্তি আয়কর দিতে হয় না। আমেরিকাতে ফেডারেল সরকারকে আয়কর
দেওয়ার সাথে সাথে স্টেট সরকারকেও আয়কর দিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে টেক্সাস-সহ ৯টি স্টেটে নাগরিকদেরকে অতিরিক্ত
আয়কর দিতে হয় না।
পারসনাল ফাইন্যান্স-এর
উপর বেস্ট সেলার বই ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’ বইটিতেও ট্যাক্স কীভাবে কম দেওয়া যায়
সে বিষয়টি বহুবার এসেছে। তাই আয়ের সাথে ট্যাক্স কমানো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যে ইলন মাস্ককে নিয়ে
এখন এতো আলোচনা-সমালোচনা, সেই মাস্ক কীভাবে আজকের এই অবস্থানে এলেন?
সাউথ আফ্রিকাতে ১৯৭১
সালে জন্মগ্রহণ করেন ইলন মাস্ক। আফ্রিকান বাবা এবং আমেরিকান মায়ের ছেলে মাস্ক
মাত্র ১২ বছর বয়সে কম্পিউটার গেম তৈরি করে সেটা বিক্রি করে ৫০০ ডলার আয় করেছিলেন।
তার টার্নিং পয়েন্ট শুরু হয় ১৯৯৫ সালে জিপ২ নামে অনলাইন সিটি গাইড সেল করে।
সফটওয়্যার কোম্পানি কমপ্যাক-এর কাছে ১৯৯৯ সালে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি দামে
জিপ২ বিক্রি করে দেন।
পরে তিনি এই টাকা দিয়ে
অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম কোম্পানি এক্সডটকম শুরু করেন। এখন যেটা সারা বিশ্বে অনলাইন
পেমেন্ট প্ল্যাটফরম পেপ্যাল হিসেবে পরিচিত। শুরুতে এই নাম নিয়ে সমালোচনা ছিলো।
কারণ এই নাম শুনলে মনে হতো কোনো পর্ণো সাইট। যাই হোক, পরে এই কোম্পানিও ১৬৫ মিলিয়ন
ডলারে ২০০২ সালে ইবে-র কাছে বিক্রি করে দেন।
এই সময়েই তার মাথায়
নতুন নতুন আইডিয়া আসতে থাকে যার মধ্যে রয়েছে, ২০০১ সালে মহাকাশযানে করে মানুষকে
মঙ্গল গ্রহে পাঠানো। এবং ২০০৪ সালে তিনি ইলেক্ট্রিক কার তৈরিতে বিনিয়োগ করেন যেটা
টেসলা নামে পরিচিত। এর বাইরে আরো দুইটি প্রজেক্ট আলোচনায় রয়েছে। একটি হলো, ব্যস্ত
শহরে মাটির নিচ দিয়ে টানেল তৈরি করে খুব দ্রুত জ্যামবিহীন মানুষকে এক স্থান থেকে
অন্যস্থানে পৌছে দেয়া এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে উচ্চ গতির
ইন্টারনেটের চাদরে মুড়িয়ে ফেলা।
তার এইসব সুপার ফাস্ট
টেকনোলজিকাল আইডিয়া মুভিতেও প্রভাব পড়ে। ২০০৮ সালে আয়রন ম্যান মুভিতে টনি স্টার্ক-এর
যে চরিত্র তা ইলন মাস্কের প্রভাব রয়েছে বলে বলেছেন এই চরিত্রে অভিনয় করা রবার্ট
ডাউনি জুনিয়র। তবে এই মুভিতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য ইনল মাস্কেও দেখা গেছে।
ইলন মাস্ক স্যাটেলাইট-এর
মাধ্যমে যে শক্তিশালী ইন্টারনেট সেবার কথা বলছেন সে সম্পর্কে জানা যায় ২০১৬ সালে।
এই বছরের ১৭ নভেম্বরে মহাকাশে ৪,৪২৫টা স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য তার প্রতিষ্ঠান
স্পেসএক্স ইউএস সরকারের কাছে আবেদন করে। এই স্যটেলাইটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে
উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করা হবে। এই সেবা যেহেতু মহাকাশ থেকে সরাসরি দেওয়া
হবে তাই কোনো কেবল, ফাইবার-অপটিকস এবং অন্যান্য সম্প্রচার যন্ত্রের দরকার পড়বে না।
এটা জেনে ঢাকার
অধিবাসীরা আনন্দিত হতে পারেন। কারন সারা বছর ধরেই ঢাকাতে রাস্তা খুড়াখুড়ির কাজ
চলে। ধূলায় সারা শহর ছেয়ে যায়। আবার কিছুদিন পরপর ইন্টারনেট, ডিশ লাইন কেটে
রাস্তায় স্তূপ করে রাখা হয়। তার কেটে ফেলে রেখে গেলেও সেই তার আর সরানোর মানুষ
নেই। আবার অনেক সময় জায়গায় জায়গায় তার ঝুলতেও দেখা যায়।
তবে ইলন মাস্ক যে
প্রস্তাব করেছেন তার জন্য কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন ডালার খরচ পড়বে বলে তিনি মনে করছেন।
অবশ্য গুগল ১ বিলিয়ন ডলার ফান্ড দিয়েছে। গুগল আরো আগে থেকেই চাচ্ছিলো সারা
পৃথিবীকে ইন্টারনেট সেবা পৌছে দিতে। ফেসবুকও এই দৌড়ের সাথে যুক্ত হয়েছে।
ফেসবুক অফ্রিকার কিছু অঞ্চল স্যাটেলাইটের মাধ্যেমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য ইলন মাস্কের স্পেসএক্স এর সহযোগিতা নিয়েছিল। স্পেসএক্স-এর রকেটে করে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রজেক্ট ফ্যালকন-৯ ধ্বংস হয়ে যায়। এতে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা হতাশা ব্যক্ত করেন।
তবে ইলন মাস্কের
প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শুরুতেই অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন এই মহাকাশ অভিযান
নিয়ে। এবং তিনি এটা সফল করতে গিয়ে টানা তিনবার ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতিবারই তার রকেট
ধ্বংস হয়েছে। প্রচুর অর্থ লোকশান দিতে হয়েছে। টানা তিনবার ব্যর্থ হওয়ার পর তাকে এক
ইন্টারভিউতে জিজ্ঞেস করা হয়, তারপরও কি আপনি চেষ্টা চালিয়ে যেতে চান?
উত্তরে মাস্ক বলেন, কেন
নয়? আই উইল নেভার গিভ আপ।
সত্যিই তিনি হাল ছেড়ে
দেন নি। পরপর তিনবার ব্যর্থ হওয়ার পর ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮-এ চতুর্থবার সফল হন।
এই সফলতার রেশ কাটতে না
কাটতেই ইলন মাস্ক আবার সমস্যায় পড়েন। স্পেসএক্স-এর সফলতার এক মাস পরেই আমেরিকা
রিসেশনে পড়ে। আর এই সময়ে তার ইলেক্ট্রিক কার কোম্পানি টেসলা প্রায় দেউলিয়া হয়ে
যাবার মুখে পড়ে। এ সময়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে টেসলাকে সরকার ঋণ
দেওয়ায় সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। যদিও পরে টেসলা সুদসহ সমস্ত টাকা ইউএস সরকারকে
ফেরত দিয়ে দেয়। টেসলা জানায় এই লোন নিয়ে তারা ২০ মিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে। এবং
এটা যেহেতু আমেরিকার করদাতাদের টাকা তাই তারা বোনাস পেমেন্টও করেছে।
ইলন মাস্কের স্পেসএক্স
আগ্রহের মূল কারণ ছিল, যে রকেট মহাকাশে পাঠানো হবে তা পৃথিবীতে ফিরে এসে আবার সেটা
পুনরায় ব্যবহার করে মহাকাশে পাঠানো যাবে। এখন পর্যন্ত যে রকেট মহাকাশে যায় তা
ধ্বংস করে ফেলেতে হয়। অর্থাৎ একবারই একটি রকেট ব্যবহার করা যায়। এর ফলে খরচের
পরিমাণ বেড়ে যায়। আর স্পেসএক্স-এর রকেট রি-ইউজেবল হওয়ার কারণে খরচ অনেক কমে যাবে।
এবং তার এই উচ্চাশাও ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সফল হয়। রি-ইউজেবল রকেট
‘ফ্যলকন ৯’ সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসে ল্যান্ড করে। তবে তার আগেই স্পেসএক্স ২০১৬
সালে তাদের উচ্চাশার কথা জানিয়েছে। তারা মঙ্গলে ২০২২ সালের মধ্যে মানুষ পাঠাতে
চায়।
ইলন মাস্কের এই যে
ট্যাকনোলজিকাল অ্যাডভান্সডমেন্ট আইডিয়া যা পৃথিবী এবং মহাকাশ সম্পর্কে ধারনা বদলে
দিচ্ছে তার জন্য অনেকেই তাকে স্টিভ জবসের সাথে তুলনা করছেন। স্টিভ জবস তার
ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন। সমালোচনার স্বীকারও হয়েছিলেন। ইলন মাস্কও
তাই। তবে এই তুলনামূলক প্রশ্ন করা হয়েছিল বিল গেটসকে একটি ইন্টারভিউতে। তিনি দুই
জনকে আলাদাভাবে দেখেন।
ইলন মাস্কে ক্রেডিট
দিচ্ছেন তার যে টেসলা কার কোম্পানি রয়েছে তার জন্য। কারণ ইলেক্ট্রিক কার পরিবেশ
বান্ধব। গত কয়েক দশক ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। টেসলার ইলেক্ট্রিক
কার এক্ষেত্রে কাজে দেবে।
তবে আজকের এই টেসলা কার
কোম্পানি যার সুফল তিনি এখন পাচ্ছেন, যার উপর ভর করে তিনি এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী,
২০০৮ সালে দেউলিয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে তাকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। সে সময়টা
তার বাইরে যেমন খারাপ যাচ্ছিল আবার ঘরের ভিতরেও খারাপ যাচ্ছিল। তখন তার স্ত্রীর
সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। এসব সামলে তাকে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে।
তবে তার এক ভিডিও থেকে
জানা যায়, তিনি বলেছেন, আমি চাই না কেউ আমার মতো হোক। কারন কাজ বন্ধ করা খুব কঠিন।
এটা কখনো থামার মতো না। সব সময় করে যেতেই হয়।
টেসলা, স্পেসএক্স, দি বোরিং কোম্পানি এতো কিছু কেন করছেন? কেন এতো কাজ করছেন?
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে
তিনি বলেন, ‘মানুষ অন্যদের দেখে মনে করে অন্যরা অনেক ভালো আছেন। মানুষ ছবি পোস্ট
করছেন যখন তিনি সবচেয়ে বেশি সুখী থাকছেন। তারা তাদের ঐ ছবি আরো ভালো দেখানোর জন্য
এডিট করছেন। তারা যদি এডিট নাও করেন তাহলে সবচেয়ে ভালো যে ছবিটা আছে সেটাই তারা
পোস্ট করেন। আপনি যদি ইনস্টাগ্রামে ছবি দেখেন তাহলে মনে হবে
তারা সবাই খুবই সুন্দর এবং সুখে আছে। কিন্তু আমি তাদের মতো দেখতে সুন্দর না। তাদের
মতো সুখী না। আর এ ভাবনাই মানুষকে দুখ দেয়, কষ্ট দেয়।
বাস্তবতা হলো, আপনি
যাদেরকে অনেক সুখী মনে করছেন আসলে তারা সুখী নন। তাদের মধ্যে কেউ আছেন ডিপ্রেসড,
ভেরি স্যাড। আপনি যেগুলো পছন্দ করেন তার মধ্যে কয়টা আপনি কিনতে পারেন? খুবই কম।
এগুলো আপনাকে কষ্ট দেয়।’
তবে তার এই কষ্টের কথা
শুনে আপনার এখন হয়তো জনপ্রিয় শিল্পী প্রয়াত আইয়ুব বাচ্চুর ‘কেউ সুখী নয়’ গানের কথা
মনে পড়ছে।
তবে তিনি কষ্টের কথা
যাই বলুন, এখন যে তিনি সুখী আছেন এটা আমরা অনুমান করতে পারি। কারণ, টেসলার শেয়ার
প্রাইস এখন প্রতিদিনই বাড়ছে। এবং সে সঙ্গে প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে তার সম্পদের
পরিমাণ বাড়ছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, টেসলার শেয়ার ৪,০০০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।
২২
জানুয়ারি ২০২১-এ টেসলার শেয়ার প্রাইস
ছিল ৮৪৬.৬৪ ডলার। মাত্র এক বছর আগেও এই প্রাইস ছিল ১১৪.৭৭ ডলার মাত্র। এবং শেয়ার
বিক্রি শুরু হয় মাত্র ১৭ ডলার দিয়ে। তাহলে রাতারাতি কী এমন হলো যে এর শেয়ার প্রাইস
বেড়ে ৮৪৬.৬৪ ডলার হয়েছে?
একই দিনে অর্থাৎ ২২
জানুয়ারি ২০২১-এ অ্যামাজনের শেয়ার প্রাইস ছিল ৩,২৯২.২৩ ডলার। অতএব বলেতেই পারেন,
তাহলে টেসলার শেয়ার প্রাইস ৪,০০০ ডলারে উঠলে ক্ষতি কী? অ্যামাজনের ইপিএস হলো ৩৪.১৫ ডলার এর উপরে এবং পি/ই রেশিও হলো ৯৬.৪১। বিপরীতে
টেসলার ইপিএস হলো মাত্র ০.৫০ ডালার এবং পি/ই রেশিও ১,৭০০.০৮!
তবে এই হিসেব দেখে বাংলাদেশে
যারা ১৯৯৬ সালে এবং পরে ২০১০ সালে শেয়ার বাজার থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন তারা
বসে বসে হয়তো মনে মনে হাসছেন। তারা হয়তো বলছেন, এই হিসেব করে শেয়ার কেনা-বেচা হয় না।
আমরা যা চেয়েছি তাই হয়েছে।
তবে শেয়ার বাজার নিয়ে
সব সময়ই উন্মাদনা চলেছে। ২০০৮ সালে আমেরিকাতে হাউজিং মার্কেটের পতনের পর তা বোঝা গেছে। যখন শেয়ার বাজার উঠতে থাকে তখন
কারোরই মনে হয় না এটা কতোটুকু উঠবে। সবাই শুধু কিনতেই থাকেন। কিন্তু এক সময় কলাপস
করে। আমেরিকাতে এই কলাপসের আগে প্রেডিক্ট করেছিলেন মাইকেল বারি। তিনি জনপ্রিয় হয়েছেন, দি বিগ শর্ট (২০১৫)
মুভিতে। তিনি প্রেডিক্ট করতে পেরেছিলেন, আমেরিকার হাইজিং মার্কেট কলাপস করবে। এবং
তাই হয়েছিল। তিনি টেসলা শেয়ার বৃদ্ধি সম্পর্কে বলেছেন, টেসলার শেয়ার প্রাইস যে
কোনো সময় কমবে। তবে কমার আগে, যেটুকু পারেন, লাভ করে নিন!
তাহলে এখন প্রশ্ন,
টেসলার শেয়ার আর কতো বাড়বে?
এর উত্তর পাওয়ার জন্য
আবারো বিল গেটস-এর কাছে ফিরে যেতে পারি। যেই ইন্টারভিউতে স্টিভ জবস এবং ইলন মাস্ক-এর
তুলনা করে প্রশ্ন করেছিলেন সেই একই ইন্টারভিউতে বিল গেটসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,
টেসলার যে শেয়ার প্রাইস বাড়ছে তা কি ঠিক আছে? যদি বাড়ে তাহলে আর কতো বাড়া উচিত বলে
আপনি মনে করেন?
বিল গেটস এই প্রশ্নের
উত্তরে বলেন, শেয়ার বাজারে যারা বিনিয়োগ করেন তারাই এর উত্তর দিতে পারবেন।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও লিড ট্যাক্স কনসালট্যান্ট, ট্যাক্সপার্ট
ড. বিজন কুমার শীল বিস্তারিত
বিপরীত স্রোত প্রতিবেদন বিস্তারিত
ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী বিস্তারিত
যারিন মালিয়াত অদ্রিতা বিস্তারিত
ডা. আতাউর রহমান বিস্তারিত
বজলুল করিম আকন্দ বিস্তারিত
বাংলাদেশ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ইম.. বিস্তারিত
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বিস্তারিত
বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাাচিত.. বিস্তারিত