English
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশঃ ২০২০-১০-০৩ ১১:২৬:৩৬
আপডেটঃ ২০২৪-০৩-২৫ ০১:০১:৩৫


ফেং সুই

ফেং সুই


 মো. বেলায়েত হোসেন

প্রাচীন চায়নায় গৃহসজ্জার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হতো তারা মনে করতেন ঘরে বাইরের সজ্জা মানবজীবনকে প্রভাবিত করে বর্তমান সময়ে বাস্তুবিদ্যার আদিরূপ বলা যেতে পারেফেং সুই নামের এই পদ্ধতিকে প্রাচীন ফেং সুই পদ্ধতি আধুনিক কালেও ব্যবহার করা হচ্ছে লেখক সেই বিষয়টিই তুলে ধরেছেন তার ধারাবাহিক রচনায়

 

পর্ব

 

ফেং সুই একটি চায়নিজ শব্দ এর মাধ্যমে শিল্প সামগ্রী রাখার স্থান নির্ণয় বোঝায় যার দ্বারা গৃহ, অফিস সাজানোর সাথে প্রাকৃতিক ঐকতানের সঙ্গে মিল রেখে সামগ্রিক ভাবে সব কিছু যাতে শান্তিপূর্ণ বরকতময় হয়ে উঠে তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয় সমগ্র পৃথিবীটাই হলো ফেং সুইয়ের সাজনো ক্ষেত্র বিধাতা এই পৃথিবীকে এমন ভাবে সাজিয়েছেন যেখানে যেটা রাখা দরকার তিনি সেখানেই সেটা রেখেছেন পাহাড়ের জায়গায় পাহাড়, সমুদ্রের জায়গায় সমুদ্র, মরুভূমির জায়গায় মরুভূমি, বনের জায়গায় বন, নদীর জায়গায় নদী, সমতলের জায়গায় সমতল অপূর্ব এই সজ্জার জন্যই পৃথিবী প্রাণময়, আনন্দময়, বরকতময় আর আবাসযোগ্য হয়েছে পৃথিবীর এই সাজানো কনসেপ্ট থেকেই ফেং সুইয়ের কনসেপ্ট ডেভেলপ করেছে

ঘর কীভাবে সাজাতে হবে? অফিস কীভাবে সাজাতে হবে? আর সেই সাজানোর ভেতর থেকেই এক ধরনের ইতিবাচক চেতনা আর ইতিবাচক ফলাফল আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে মূলত এটাই হলো ফেং সুইয়ের মূল কনসেপ্ট বা ধারণা

পৃথিবীর নির্মাণ কৌশল থেকে মানুষ স্থাপত্য শিল্পের জ্ঞান পেয়েছে আর সাজানো রূপ থেকে শিল্পচর্চার আধ্যাত্মিকতার জ্ঞান পেয়েছে সবই ফেং সুইয়ের অন্তর্ভুক্ত

পৃথিবীর জীবন ব্যবস্থা মানব জাতিকে শুরু থেকেই ভাবতে শিখিয়েছে এই ভাবনা থেকেই শুরু হয় ফেং সুইয়ের অগ্রযাত্রা পৃথিবীর নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বস্তুর বিন্যাস বা সাজানো অবস্থান অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল বহন করে কারণ প্রতিটি বস্তুর একটি নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সি বা তরঙ্গমালা রয়েছে সঠিক অবস্থানে সেই তরঙ্গমালা পৃথিবীর তরঙ্গমালার সাথে একত্রিত হয়ে শক্তিশালী ইতিবাচক তরঙ্গমালার সৃষ্টি করে এই শক্তিশালী তরঙ্গমালার দ্বারাই মানুষ ইতিবাচক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয় সাজানো বস্তুর অবস্থান এলোমেলো বা বিক্ষিপ্ত হলে নেগেটিভ ফোর্স তৈরি হয় যার দ্বারা মানুষ নেতিবাচক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয় পরোক্ষে সাফল্য নষ্ট হয়

ফেং সুই এক অতি আধুনিক অগ্রগামী বিজ্ঞান নদীর গতিপথ, বিশাল সুউচ্চ পাহাড়, অতি প্রশস্ত সমুদ্র, গাছপালার বর্ধন প্রক্রিয়া মানুষের অনুভূতিকে সাড়া দিয়েছে তার সাধারণ জ্ঞানকে অসাধারণ করে তুলেছে মানুষের মাঝে সকল রকম জ্ঞানের সমারোহ এই প্রকৃতির মাঝ থেকে ঘটেছে সর্ব রকমের জ্ঞান এই সাজানো জগতের মাঝে নিহিত রয়েছে ফেং সুই বস্তুর সজ্জা জ্ঞানের ওপর বিশেষ জোর দেয় 

ফেং সুইয়ের জ্ঞান - জ্ঞানের জগতে ভ্রমণ সময় স্থান যার অন্যতম মাধ্যম ফেং সুই এক পরিবর্তনহীন জ্ঞান কারণ এটা প্রাকৃতিক ঘর, অফিসের আসবাবপত্র সাজানোর মধ্য দিয়েই প্রকৃতির ইতিবাচক শক্তিকে কাজে লাগানো হয় ফেং সুই তার নির্দেশনা দেয় এই পদ্ধতির দ্বারা মানুষ দীর্ঘ নিরোগ জীবন, পারিবারিক সুখ, ব্যক্তিগত সাফল্য সম্পদ অর্জনের মধ্য দিয়ে এক সৌভাগ্যপূর্ণ জীবন অর্জনে সমর্থ হয় তাই বর্তমান এই বিজ্ঞানময় জগতে ফেং সুই হয়ে উঠেছে সৌভাগ্যপূর্ণ জীবনের এক অত্যাবশ্যক বিধিমালা


ক্যাটেগরিঃ জীবনধারা,


মো. বেলায়েত হোসেন

জ্যোতিষ শাস্ত্র গবেষক